নোটিশ :
hathazarinews.com ওয়েব সাইটে আপনাকে স্বাগতম...
সংবাদ শিরোনাম:
ফরহাদাবাদে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার কে ঘর নির্মাণ করে দেয়া হবে: উপদেষ্টা ফারুক ই আজম হাটহাজারীতে আগুনে পুড়লো ৪ পরিবারের বসতঘর পণ্ডিত স্বর্ণময় চক্রবর্তীর পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন হাটহাজারীতে বন্যা দূর্গতদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেন চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার  ফরহাদাবাদের বংশালে বন্যা কবলিত ভাইকে দেখতে গিয়ে বোনের মৃত্যু ফরহাদাবাদে মধ্যে রাতে বন্যার পানি ঘরে: মালামাল বের করতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট যুবক নিহত হাটহাজারীতে নির্মাণাধীন ভবনে পড়েছিল ব্যবসায়ীর লাশ বীর মুক্তিযোদ্ধা এলএমজি মাহাবুর ইন্তেকাল  নরমাল ডেলিভারিতে ৮ নবজাতকের জন্ম হাটহাজারী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রবিবার থেকেই হাটহাজারী মডেল থানার পুলিশি কার্যক্রম শুরু: ওসি মনিরুজ্জামান 
টেকনাফে ৩ লাখ পিস ইয়াবা ও ৫০০ বোতল ফেনসিডিল নিয়ে দুটি ওয়ান শুটারগানসহ আটক ৪

টেকনাফে ৩ লাখ পিস ইয়াবা ও ৫০০ বোতল ফেনসিডিল নিয়ে দুটি ওয়ান শুটারগানসহ আটক ৪

নিজস্ব প্রতিবেদক:

কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন হ্নীলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে কুখ্যাত মাদক কারবারী বার্মাইয়া রফিকের রঙ্গীখালীর গহীন পাহাড়ী আস্তানায় অভিযান পরিচালনা করে ৩ লাখ ১৪ হাজার পিস ইয়াবা, ২ কেজি ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, ২টি ওয়ান শুটার গানসহ ৪ রাউন্ড কার্তুজ এবং ৫০০ বোতল ফেনসিডিল নিয়ে ৪ মাদক ব্যবসায়ীকে আটক করে র্যাব ১৫।

বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) মধ্যে রাত ২টার দিকে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তাদের কে আটক করা হয়।

 

র‌্যাব-১৫ এর অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল এইচএম সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কক্সবাজার এর একটি চৌকস দল গোয়েন্দা সূত্রে জানতে পারে, মাদক পাচারের হাব হিসেবে ব্যবহৃত কক্সবাজারের টেকনাফ থানাধীন হ্নীলার সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে কুখ্যাত মাদক কারবারী বার্মাইয়া রফিক এর মাদক সিন্ডিকেট পার্শ্ববর্তী দেশ হতে বড় একটি মাদকের চালান নিয়ে রঙ্গীখালীর গহীন পাহাড়ী আস্তানায় অবস্থান করছে। উক্ত তথ্যের ভিত্তিতে ২২ ডিসেম্বর রাত অনুমান ২টার সময় র‌্যাব-১৫ এর একটি চৌকস আভিযানিক দল বর্ণিত স্থানে মাদক বিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় র‌্যাবের অভিযানের বিষয়টি বুঝতে পেরে মাদক চোরাকারবারীরা দিক-বিদিক দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টাকালে মাদক ব্যবসায়ী, অবৈধ অস্ত্রধারী এবং পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাকারবারির অন্যতম হোতা ও ইয়াবার গডফাদার খ্যাত নবী হোসেনের অন্যতম সহযোগী মোঃ রফিক আহাম্মেদ প্রকাশ বার্মাইয়া রফিক (৪০), পিতা-আব্দুল কাদের, সাং-ওয়াব্রাং সুইচপাড়া এবং তার একান্ত সহযোগী ফরিদ আলম (২৮), পিতা-নুর আলম, সাং-মৌলভী বাজার, উভয়ের ৩নং ওয়ার্ড, হ্নীলা ইউনিয়ন, থানা-টেকনাফ, জেলা-কক্সবাজার’দ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। সেখান থেকে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থা থেকে উদ্ধার করা হয় ৩,১৪,০০০ (তিন লক্ষ চৌদ্দ হাজার) পিস ইয়াবা, ০২ কেজি ক্রিস্টাল মেথ বা আইস, ০২টি ওয়ান শুটার গান এবং ০৪ রাউন্ড কার্তুজ।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা পরস্পর যোগসাজসে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত বার্মাইয়া রফিক ছোট বেলায়ই তার পিতা-মাতার সাথে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে এবং কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানার হ্নীলা ইউনিয়নের ০৩নং ওয়ার্ডের ওয়াব্রাং সুইচপাড়া এলাকায় বসবাস শুরু করে। জীবিকার মাধ্যম হিসেবে সে প্রথমে নাফ নদীতে মাছ ধরে এবং মাছ ধরার আড়ালে স্থানীয় ও মায়ানমারের মাদক ব্যবসায়ীদের নিয়ে মাদক ব্যবসার ভয়ংকর একটি সিন্ডিকেট গড়ে তুলে। গ্রেফতারকৃত বার্মাইয়া রফিকের চাহিদা মোতাবেক পার্শ্ববর্তী দেশের মাদক ব্যবসায়ীরা মাদকের চালান প্রথমে নবী হোসেনের মাধ্যমে নাফ নদী পার করে দেয় এবং সেখান থেকে বার্মাইয়া রফিক তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে মাছ ধরার বোটে করে বাংলাদেশে নিয়ে এসে রঙ্গীখালির গহীন পাহাড়ে তাদের আস্তানায় ৬/৭ দিনের জন্য মজুদ করে। এ সময় বার্মাইয়া রফিক’সহ তার সিন্ডিকেটের সহযোগীরা আস্তানায় অবস্থান করতো এবং মজুদকৃত মাদকের চালান স্থানীয় মাদক ব্যবসায়ী, রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের নির্ধারিত এজেন্টদের নিকট সুবিধাজনক সময়ে সরবরাহ করতো। মাদকের চালান সরবরাহের পর তারা রঙ্গীখালির পাহাড়ী আস্তানা ত্যাগ করতো। পুনরায় বিপুল পরিমাণ মাদকের চালান বাংলাদেশে নিয়ে এসে রঙ্গীখালির কোন না কোন পাহাড়ী আস্তানায় মজুদ করে সরবরাহ করার এই প্রক্রিয়া অব্যাহতভাবে চলতে থাকতো।মাদকের টাকা লেনদেনের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে গ্রেফতারকৃত বার্মাইয়া রফিক জানায় যে, তার নেতৃত্বে পাশ্ববর্তী দেশের মাদক ব্যবসায়ী সিকদারপাড়া এলাকার আইয়াজ এবং নাকফুরা এলাকার সলিম ও জুনায়েদ এর নিকট মাদকের চাহিদা করা হতো। চাহিদা মোতাবেক পাশ্ববর্তী দেশ থেকে অবৈধ পথে নিয়ে আসা মাদক তার নির্ধারিত এজেন্টের নিকট বিক্রয় এবং বিক্রয়লব্ধ অর্থ বার্মাইয়া রফিক তার এক নিকটতম আত্মীয়ের মাধ্যমে সংগ্রহ করতো। একইভাবে ক্রয়কৃত মাদকের মূল্য বাবদ ক্যাশ টাকা তার ঐ নিকটতম আত্মীয়ের মাধ্যমে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের নিকট প্রেরণ করতো। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা উক্ত টাকা বিভিন্ন কোম্পানীর বিক্রয়কর্মীদের মাধ্যমে টেকনাফস্থ কতিপয় হুন্ডী ব্যবসায়ীদের নিকট পাঠাতো। অতঃপর হুন্ডী ব্যবসায়ীরা প্রাপ্ত টাকা টেকনাফস্থ বিভিন্ন ব্যাংকের মাধ্যমে ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জ এর বিভিন্ন ব্যাংকের শাখায় প্রেরণ করতো। পরবর্তীতে এই টাকা ডলারে রুপান্তর করে সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, মায়ানমার’সহ বিভিন্ন দেশে প্রেরণ করতো, যা পরে বিভিন্ন হাত বদল হয়ে পার্শ্ববর্তী দেশের মাদক ব্যাবসায়ীদের হাতে পৌঁছাতো। গ্রেফতারকৃত বার্মাইয়া রফিক মাদক ব্যবসার পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী দেশ এবং বাংলাদেশের মাদক ব্যাবসায়ীদের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন ও মূল সমন্বয়কারী হিসেবেও ভূমিকা পালন করতো। রেকর্ডপত্র যাচাইন্তে তার বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় হত্যা ও মাদক’সহ ০৩টি মামলা সংক্রান্তে তথ্য পাওয়া যায়।

গ্রেফতারকৃত ফরিদ আলম বার্মাইয়া রফিকের অন্যতম সহযোগী। সে বার্মাইয়া রফিকের নির্দেশে মাদক পাচার সংক্রান্তে সকল কার্যক্রম পরিচালনা করতো। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত ফরিদ বার্মাইয়া রফিকের মাছ ধরার বোটের আড়ালে ইয়াবার চালান নাফ নদীতে হস্তান্তর/গ্রহণ এবং বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী তাদের সুবিধাজনক স্থানে পৌঁছে দিতো। সে বার্মাইয়া রফিকের সিন্ডিকেটের ইয়াবা ব্যবসায়ীদের ইয়াবা পাচারকালে প্রশাসনের গতিবিধি এবং প্রতিপক্ষ মাদক কারবারীদের বিভিন্ন তথ্যাদি প্রদান করে থাকে।

গ্রেফতারকৃত মোঃ রফিক আহাম্মেদ প্রকাশ বারমাইয়া রফিক’কে জিজ্ঞাসাবাদে তার নেতৃত্বে পরিচালিত মাদক সিন্ডিকেটের বেশকিছু সদস্যের বিস্তারিত তথ্যাদি ইতিমধ্যে আমরা জানতে পেরেছি। তাদের গ্রেফতারে র‌্যাবের অভিযানিক কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এছাড়াও পৃথক অপর একটি অভিযান গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল রাত অনুমান  সময় কক্সবাজার জেলার টেকনাফ থানাধীন সদর ইউনিয়নের হাবিবপাড়া এলাকার জনৈক সৈয়দুর রহমান এর বসত ঘরে বিপুল পরিমাণ মাদক বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে মজুদ করছে এমন তথ্যের প্রেক্ষিতে মাদক বিরোধী পৃথক আরেকটি অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় র‌্যাবের আভিযানিক দলের উপস্থিতি বুঝতে পেরে রাতের অন্ধকারে ঘর থেকে কৌশলে পালায়নের চেষ্টাকালে সৈয়দুর রহমান (৪৯) এবং আজিজুর রহমান (৪৪), উভয়ের পিতা-মৃত অলিচাঁন, সাং-বড় হাবিবপাড়া, ওয়ার্ড নং ০৮, সদর ইউনিয়ন, টেকনাফ, কক্সবাজারদ্বয়কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। পরবর্তীতে উপস্থিত সাক্ষীদের সম্মুখে আটককৃত ব্যক্তিদ্বয়ের দেহ ও বিধি মোতাবেক তাদের বসত ঘর তল্লাশী করে সর্বমোট ৫০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধার করা হয়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা তাদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ এবং র‌্যাবের উপস্থিতি বুঝতে পেরে তাদের অপর এক সহযোগী পালিয়ে যায় মর্মে স্বীকার করে। জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা তিনজনই আপন সহোদর ভাই এবং চিহ্নিত মাদক কারবারী। তারা দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে মাদকদ্রব্য বাংলাদেশ নিয়ে আসে এবং নিজেদের হেফাজতে বিভিন্ন কৌশলে মজুদ করে রাখতো। মজুদকৃত মাদকদ্রব্য ফেনসিডিল কক্সবাজারসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ এবং ক্ষেত্রবিশেষ পার্শ্ববর্তী দেশেও ফেনসিডিল পাচার করতো বলে জানা যায়। এছাড়াও গ্রেফতারকৃতরা কুমিল্লার সীমান্তবর্তী হতে ফেনসিডিল সংগ্রহপূর্বক নদী পথে মহেষখালী হয়ে পাশ্ববর্তী দেশে পাচারের জন্য টেকনাফ আনায়ন করলে গোয়েন্দা সূত্রে অবগত হয়ে ফেনসিডিলসহ মাদক কারবারীদের র‌্যাব আটক করতে সক্ষম হয়।

গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

এই পোস্টটি আপনার সামাজিক মিডিয়াতে ভাগ করুন




সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত,© এই সাইডের কোনো লেখা, ছবি, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার সম্পুর্ণ বেআইনি
Desing & Developed BY ServerNeed.com